সম্মানিত করদাতা,
bdtax.com.bd এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা । আপনি নিশ্চয় অবগত হয়েছেন যে, ১লা জুলাই থেকে ২০১৭-২০১৮ কর বর্ষের আয়কর রিটার্ন শুরু হয়েছে। অর্থাৎ এখন আপনার রিটার্ন জমা দিতে হবে ২০১৬-১৭ আয় বর্ষের । আরও সহজ করে বললে-২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত আপনার যা আয় হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করেই রিটার্ন জমা দিতে হবে।
সেই সাথে মনে রাখতে হবে, রিটার্নে উল্লিখিত খাতগুলির আয়-ব্যয়, বিনিয়োগের প্রমাণ করতে আপনাকে আনুষঙ্গিক কাগজপত্র রিটার্নের সঙ্গে জমা দিতে হবে। আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতের জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করা প্রয়োজন তার একটি সংক্ষেপিত তালিকা নিম্নে দেয়া হল:
১। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে বেতনের প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করা জরুরী। সেই সাথে যে ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন নগদায়ন করা হয় সেই ব্যাংক হতে হিসাব বিবরণীও সংগ্রহ করতে হবে।
২। কোনো করদাতার যদি বাড়ি ভাড়া থেকে আয় থাকে; তা করের মধ্যে পড়বে। এ খাতের আয় নির্ধারণে যদি বাড়ি নির্মাণে কোন ঋণ নেয়া থাকে তবে ঋণ দাতা প্রতিষ্ঠান হতে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করা জরুরী। এ ব্যতিত জমির খাজনার রশিদ, বিদ্যুৎ বিলের হিসাব, গ্যাস বিলের হিসাব ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে।
৩। পেশা/ব্যবসা খাতের আয় নিরুপণের জন্য ব্যাংক হিসাব বিবরণী সংগ্রহ করা জরুরী। ১লা জুলাই ২০১৬ হতে ৩০শে জুন ২০১৭ পর্যন্ত আপনার ব্যবসার ক্রয়-বিক্রয় নীট লাভ স্থিতিপত্র প্রস্তুতের জন্য একটি বিবরণী তৈরী করতে হবে।পেশার ক্ষেত্রে আপনার পেশাগত আয়ের একটি বিবরণী তৈরী করতে হবে।
৪। ২০১৬-২০১৭ আয় বর্ষে যদি কোন স্থাবর/অস্থাবর সম্পদ অর্থাৎ জমি/ফ্লাট/গাড়ি/বাড়ি ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয় করে থাকেন তবে ক্রয়-বিক্রয় দলিল অগ্রিম আয়করসহ অন্যান্য খরচাদির বিবরণী/প্রমানাদি সংগ্রহ করতে হবে।
৫। শেয়ার ব্যবসায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিও হিসাব বিবরণীর প্রতিবেদন সংগ্রহ করা জরুরী। শেয়ারের বিপরীতে ডিভিডেন্ড প্রাপ্তি থাকলে প্রত্যয়নপত্র/ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে।
৬। মিউচুয়াল ফান্ড সঞ্চয়পত্র ইত্যাদির ক্ষেত্রে ডিভিডেন্ড/প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
৭।কম্পিউটার ক্রয়ের রশিদ এবং জাকাত ফান্ডে দানের ক্ষেত্রে প্রদত্ত টাকার রশিদ সংগ্রহ করতে হবে।
৮।ফার্মের অংশীদারীত্ব থাকলে উক্ত ফার্মের স্টেটমেন্ট অফ অ্যাকাউন্ট উইথ ব্যালেন্স শীট সংগ্রহ করতে হবে।
৯। নিজের নামে স্ত্রীর নামে কিংবা ছেলে-মেয়ের নামে ইন্সুরেন্স করা হলে বা থাকলে ইন্সুরেন্সের প্রদত্ত প্রিমিয়ামের রশিদ। কোন তফশিলি ব্যাংকে ডিপিএস থাকলে তার হিসাব বিবরণী। এফডিআরএর ক্ষেত্রে এফডিআরএর হিসাব বিবরণী।
১০। ২০১৬-২০১৭ আয় বর্ষে যদি কোন গিফট(দান) পেয়ে থাকেন বা গিফট(দান) দিয়ে থাকেন তার প্রমানাদি সংগ্রহ করতে হবে। এবং আলোচ্য আয় বর্ষে যদি অগ্রিম আয়কর কিংবা বকেয়া কর পরিশোধ করা হয়ে থাকে তবে তা লিপিবদ্ধ করতে হবে।
শুধু আয়কর ও সম্পদ বিবরণীর ফরম পূরণ করে দিলেই হবে না। আয় কিংবা বিনিয়োগ করে কর রেয়াতের বিপরীতে বেশ কিছু কাগজপত্র আয়কর বিবরণীর দলিলের সঙ্গে জমা দিতে হবে। যেমন: সিকিউরিটিজের ওপর সুদ আয়ের সনদ, বন্ধকি ঋণের সুদের সনদ, মূলধনি সম্পদের বিক্রয় কিংবা ক্রয়মূল্যের চুক্তিপত্র ও রসিদ, মূলধনি ব্যয়ের আনুষঙ্গিক প্রমাণপত্র, সুদের ওপর উৎসে কর কাটার সার্টিফিকেট। কোনো করদাতা যদি কর রেয়াত নিতে চান, তবে বেশ কিছু কাগজপত্র লাগবে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ভবিষ্য তহবিলে চাঁদার সনদ, ঋণ বা ডিবেঞ্চার, সঞ্চয়পত্র, স্টক বা শেয়ারে বিনিয়োগের প্রমাণপত্র, ডিপোজিট পেনশন স্কিমে চাঁদার সনদ, কল্যাণ তহবিলে চাঁদার সনদ প্রভৃতি।
সময়মতো সঠিকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা প্রত্যেক করদাতার জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মনে রাখবেন, নিরবচ্ছিন্নভাবে ‘কর দিবস’ ৩০শে নভেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত চলবে। ইতোমধ্যে আপনার রিটার্ন দাখিল না করে থাকলে আজই প্রস্তুতি নিন। কোন সহযোগিতার প্রয়োজন হলে আমাদের ইমেইল করুন support@bdtax.com.bd। ধন্যবাদ।
তথ্য সূত্রঃ blog.bdtax.com.bd