এক নজরে একজন লেফটেন্যান্ট
বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করলে প্রথম যে পদবী আপনি পাবেন, তা হলো লেফটেন্যান্ট। তবে কমিশন পাওয়ার ব্যাপারটি অত্যন্ত কঠিন। একজন লেফটেন্যান্ট হবার জন্য ইন্টার সার্ভিসেস সিলেকশন বোর্ডের (ISSB) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (BMA) প্রায় ৩ বছর ট্রেনিং গ্রহণের পর কমিশন লাভের মাধ্যমে আপনার পক্ষে সম্মানজনক এ র্যাঙ্ক অর্জন করা সম্ভব।
এক নজরে একজন লেফটেন্যান্ট
বিস্তারিত জানুন
একজন লেফটেন্যান্ট কোথায় কাজ করেন?
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে।
একজন লেফটেন্যান্ট কী ধরনের কাজ করেন?
একজন লেফটেন্যান্টের কাজ বিএমএতে থাকাকালীন পাওয়া শিক্ষা ও তার কোরের উপরে নির্ভর করে। এ কোরগুলো হলো –
- আর্টিলারি;
- ইনফ্যান্ট্রি;
- আরমার্ড (ট্যাঙ্ক);
- অর্ডন্যান্স (সমরাস্ত্র);
- সিগন্যালস;
- শিক্ষা;
- ইঞ্জিনিয়ারিং;
- ইএমই (Electrical and Mechanical Engineers – EME);
- এএসসি (Army Services Corps – ASC);
- এএমসি (Army Medical Corps – AMC) ও অন্যান্য।
একজন লেফটেন্যান্টের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয়?
প্রথম শর্তঃ প্রার্থীকে জন্মসূত্রে বাংলাদেশি ও অবিবাহিত হতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ন্যূনতম এইচএসসি পাশ হতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের যে কোন একটিতে ন্যূনতম জিপিএ ৪.৫ এবং আরেকটিতে জিপিএ ৫ পাওয়া লাগবে। ইংরেজি মিডিয়ামে পড়াশোনা করে থাকলে ও লেভেলে ৬টি বিষয়ের মধ্যে ৩টিতে ন্যূনতম ‘এ’ গ্রেড এবং ৩টিতে ন্যূনতম ‘বি’ গ্রেড পাওয়া আবশ্যক। এ লেভেলে ২টি বিষয়ের মধ্যে ২টিতেই ন্যূনতম ‘বি’ গ্রেড থাকতে হবে।
বয়সঃ১৯ – ২৪ বছর।
উচ্চতাঃ ছেলেদের জন্য উচ্চতা ১.৬৭ মিটার বা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। মেয়েদের জন্য উচ্চতা ১.৬ মিটার বা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি।
ওজনঃ ছেলেদের সর্বোচ্চ ওজন হতে পারবে ৫০ কেজি বা ১১০ পাউন্ড। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি ৪৭ কেজি বা ১০৪ পাউন্ড।
বুকঃ ছেলেদের বুক স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি ও প্রসারিত অবস্থায় ৩২ ইঞ্চি হতে হবে। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে তা ২৮ ইঞ্চি ও প্রসারিত অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি।
একজন লেফটেন্যান্টের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?
- উপস্থিত বুদ্ধি;
- আত্মবিশ্বাস;
- ইংরেজিতে দক্ষতা;
- নেতৃত্বগুণ।
উল্লেখ্য যে, সেনাবাহিনীতে শারীরিক দক্ষতা, সুস্থতা ও সামর্থ্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শারীরিক সামর্থ্য ভালো না হলে প্রশিক্ষণের সময় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
লেফটেন্যান্ট হবার ধাপগুলো কী কী?
- প্রিলিমিনারী লিখিত পরীক্ষা;
- লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ১৫-২০ মিনিটের একটি ছোট মৌখিক পরীক্ষা;
- মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আইএসএসবির (ISSB) চূড়ান্ত পরীক্ষা;
- আইএসএসবির (ISSB) চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে প্রায় ৩ বছরের প্রশিক্ষণ।
কষ্টসাধ্য ও দুঃসহ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করতে পারলে ৩ বছরের মাথায় আপনি কমিশনপ্রাপ্ত হয়ে একজন লেফটেন্যান্ট হবার গৌরব অর্জন করতে পারবেন।
একজন লেফটেন্যান্টের মাসিক আয় কেমন?
৮ম পে স্কেল অনুসারে একজন লেফটেন্যান্টের মূল বেতন ৳২৩,৫০০। তবে এর মধ্যে থেকেই আপনার আর্মি মেসে থাকার খরচ চালাতে হয়। শুধু মূল বেতন ছাড়াও একজন লেফটেন্যান্ট কাজ ও পোস্টিং সাপেক্ষে ভাতা পেয়ে থাকেন।
একজন লেফটেন্যান্টের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?
লেফটেন্যান্ট থেকে পরবর্তী পদবী ক্যাপ্টেন হবার জন্য ৩টি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এক্ষেত্রে সময় লাগে প্রায় দুই থেকে আড়াই বছরের মতো। ক্যাপ্টেন থেকে মেজর পদে উন্নীত হতে সময় লাগে প্রায় ৩ বছরের মতো। এরপরের পদোন্নতিগুলোর নির্দিষ্ট কোন সময়কাল নেই। সেগুলো যোগ্যতা ও অবস্থাসাপেক্ষ হয়। পদগুলো হলো –
- লেফটেন্যান্ট কর্নেল
- কর্নেল
- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
- মেজর জেনারেল
- লেফটেন্যান্ট জেনারেল
- জেনারেল
- ফিল্ড মার্শাল
উল্লেখ্য যে, ফিল্ড মার্শাল যেকোন সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদ হলেও আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত এ পদে কেউ নিয়োগ পাননি।
তথ্য সূত্রঃ careerki.com
No comments