কিভাবে নিজের একাডেমিক বিষয়ের বাইরে গিয়ে ক্যারিয়ার গড়া যায়?
কিভাবে নিজের একাডেমিক বিষয়ের বাইরে গিয়ে ক্যারিয়ার গড়া যায়?
ক্যারিয়ার গড়ার জন্য কি একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ? অনেকের মধ্যে একটা মিথ প্রচলিত আছে আর সেটা হচ্ছে, যে বিষয়ে পড়াশোনা করেছি সে বিষয়ে ক্যারিয়ার না গড়লে আমরা ভালো করতে পারব না। এটা সত্যি যে যার যার একাডেমিক বিষয় সম্পর্কিত ক্যারিয়ার গড়তে পারলে খুব ই ভালো, কারন সে বিষয়ে অনেক গভীর জ্ঞান থাকার সম্ভাবনা আছে।
কিন্তু পৃথিবীতে এমন অনেক উদাহরণ আছে যেখানে মানুষ ক্যারিয়ার গড়ছে যা তার একাডেমিক বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় কিন্তু খুব দ্রুত সফলতাও পাচ্ছে। এর পিছনে কারন হচ্ছে, একাডেমিক বিষয় ছাড়াও যদি কারো অন্যান্য দক্ষতা থাকে, সে সেটা খুব ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে। তবে হুট করে কোন কিছু করা উচিত হবে না। এর জন্য কিছু কিছু ধাপে এগোতে হবে।
চলুন দেখে আসি কি কি ধাপ অনুসরণ করে একাডেমিক বিষয়ের সম্পূর্ণ বাইরে গিয়েও ক্যারিয়ার গড়া যায়।
আপনার পছন্দের জায়গা খুঁজে বের করুনঃ একাডেমিক বিষয়ের বাইরে ক্যারিয়ার গড়তে সবার আগে যেটা প্রয়োজন তা হচ্ছে নিজের পছন্দের বিষয় খুঁজে বের করা। আপনি হয়তো একাডেমিক বিষয় উপভোগ করেন না কিন্তু এমন কোনও বিষয় আছে যেটাতে আপনি ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করতে পারেন। আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে সে রকম কিছু। আবশ্যই এমন কিছু পছন্দ করুন যেটাতে আপনি সহজে আরও বেশি দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, আপনি প্রায় ই বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজ করে থাকেন। হতে পারে সেটা আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ইভেন্ট বা পারিবারিক কোন প্রোগ্রাম। তার মানে আপনি একজন ভালো অর্গানাইজার।
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, আপনি প্রায় ই বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজ করে থাকেন। হতে পারে সেটা আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ইভেন্ট বা পারিবারিক কোন প্রোগ্রাম। তার মানে আপনি একজন ভালো অর্গানাইজার।
সুতরাং আপনি বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম এ সহজেই কাজ শুরু করতে পারেন। তাছাড়াও বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসের জন্যও এমন মানবসম্পদ প্রয়োজন যারা সহজেই বিভিন্ন ইভেন্ট এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তদারকি করতে পারে। এমনকি নিজে নিজে শুরু করতে পারেন একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম। ঠিক এক ই কথা অন্যান্য দক্ষতার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
নেটওয়ার্কিং বাড়ানঃ একাডেমিক বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ুন আর অন্য কোন বিষয় নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ুন, আপনার খুব ভালো নেটওয়ার্কিং থাকা জরুরি। হতে পারে আপনি খুব ভালো কোড করতে জানেন আর তাই আপনি কোন স্বনামধন্য সফটওয়্যার ফার্ম এ কাজ করতে চান। সেটার জন্য এখন থেকেই বিভিন্ন কোম্পানির সাথে যোগাযোগ শুরু করে দিন। যদি সম্ভব হয় তাদের বিভিন্ন সফটওয়্যার এর ত্রুটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন এবং কোনও খুঁত থাকলে তাদের কে জানান। এতে করে তারা ধারণা করতে পারবে আপনি আসলে কোন ধরনের কোড বা প্রোগ্রামিং করতে জানেন।
নেটওয়ার্কিং করার জন্য সব চেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার ক্লাব এ যোগ দেয়া। সেখানে আপনি খুব সহজে আপনার ক্যাম্পাস এর সিনিয়র, যারা খুব ভালো জায়গায় কাজ করছে, তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবেন। তাদের কে আপনার পছন্দের বিষয় সম্পর্কে জানান এবং আপনি কিভাবে সেখানে কাজ করতে পারেন তা নিয়ে আলোচনা করুন। এতে করে পড়াশোনা শেষ করার আগেই আপনার কাজের ক্ষেত্র তৈরি থাকবে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকুরির বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণঃ আপনি যে বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী, ঠিক সে বিষয় টা নিয়ে যে ধরনের চাকরির বিজ্ঞাপন পাবেন সেগুলো একটু ভালো করে বিশ্লেষন করুন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখতে পাবেন দক্ষতা থাকলে একাডেমিক বিষয় শিথিলযোগ্য। অর্থাৎ সরাসরি আপনার কোনও ডিগ্রি না থাকলেও সেখানে কাজ করার সুযোগ আছে। একটু ভালো করে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন তারা বাড়তি কিছু যোগ্যতা চাচ্ছে যা হয়তো সবার নেই। আর ঠিক এখানেই আপনার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সে সকল বিষয় নিয়ে জানা শুরু করে দিন। এখনকার যুগে নতুন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা মোটেও কঠিন কিছু না। অনেক ফ্রি রিসোর্স রয়েছে যেখানে আপনি খুব সহজেই কঠিন কঠিন বিষয়গুলো আয়ত্ত করে ফেলতে পারবেন।
বিভিন্ন প্রফেশনাল ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করুনঃ যেহুতু আপনি সরাসরি আপনার একাডেমিক বিষয়ে কোনও কিছু করতে আগ্রহী নন, তাই অন্যান্য বিষয়ে ক্যারিয়ার সম্পর্কিত জ্ঞানের জন্য বিভিন্ন প্রফেশনাল ওয়ার্কশপ এ যোগ দিতে পারেন। আর এ ক্ষেত্রে সব চেয়ে ভালো হয় যদি আপনি বিওয়াইএলসি’র অফিস অফ প্রফেশনাল ডেভেলাপমেন্ট (ওপিডি) এর দুই দিন ব্যাপী ওয়ার্কশপ এ অংশগ্রহণ করেন।
এখানে সিভি রাইটিং থেকে শুরু করে কিভাবে ইন্টারভিউ ফেস করবেন, নেগোশিয়েট করবেন ইত্যাদি জানতে পারবেন। এছাড়াও থাকবে ডেমো ইন্টারভিউ সেশন, যেখান থেকে আপনি ধারণা নিতে পারবেন কিভাবে ইন্টারভিউ এর প্রশ্নের উত্তর দেয়া যায়। ওপিডি ছাড়াও আরও অন্যান্যা ওয়ার্কশপে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী অংশগ্রহণ করতে পারেন যা আপনার জ্ঞানের পরিধি নিঃসন্দেহে অনেক বাড়াবে।
শুরু করে দিন নিজের উদ্যোগঃ যে বিষয়ে ই পড়াশোনা করেন না কেন, চাকরি ই করতে হবে ব্যাপার টা এমন নয়। বরং আপনার হাত ধরেই সৃষ্টি হতে পারে নতুন কর্মসংস্থান। নিজেকে গড়ে তুলতে পারেন একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। একাডেমিক বিষয়ের বাইরে যদি আপনার এমন কোন আইডিয়া থাকে যেখানে অনেক সামনে এগোনো সম্ভব, সেটা নিয়েই শুরু হতে পারে আপনার উদ্যোক্তা জীবন।
তবে চেষ্টা করতে হবে এমন কিছু নিয়ে উদ্যোগ নেয়া যেটা আর সবার চেয়ে আলাদা। তবে আর আপনার চাকরি করার কোন প্রয়োজন হবে না।
উপোরক্ত বিষয়গুলো ভালোভাবে অনুসরণ করে এখন থেকেই শুরু করুন আপনার স্বপ্নযাত্রা।
তথ্যসূত্রঃ http://blog.bylc.org/2018/06/25/%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B0%E0%A7%87/
No comments