যেকোনো কাজ শুরু করার আগে লক্ষ্য স্থির করতে হবে।

যেকোনো কাজ শুরু করার আগে লক্ষ্য স্থির করতে হবে। অত্যান্ত সূর্যকউজ্জল দিনেও খুব শক্তিসালি আতস কাচ কাগজে আগুন জালাতে পারবেনা, যদি কাঁচটি সব সময় নাড়ানো হয় ।কিন্তু যদি লক্ষ্যস্থির করে আতস কাঁচটিকে এক জায়গায় ধরে রাখা হয়, তাহলে কাগজে আগুন জ্বলে উঠবে। মন সংযোগের এই রকম ক্ষমতা।
আপনি কি কোনও রেলগাড়িতে বা প্লেনে কোথায় যাচ্ছেন না জেনেউঠে পরবেন? নিশ্চিত উত্তর হচ্ছে না । তাহলে লোকে নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছারাই কেন জীবনের পথে অগ্রসর হয়? তাই আমাদের সকলের উচিৎ লক্ষ্য ঠিক করা।
🕮 একটি ছেলে তার বাবার সঙ্গে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলো। ছেলেটি বাবাকে জিজ্ঞেস করল, ঘুড়িটি কিসের জোরে উপরে উঠছে। বাবা জবাব দিলেন সুতোর জোরে। ছেলে জবাব দিলেন কিন্তু বাবা সুতো তো ঘুড়িটিকে নিচের দিকে টেনে রেখেছে?? বাবা তখন ছেলেকে ভালো করে লক্ষ্য করতে বলে, বাবা সুতোটি ছিঁড়ে দিলেন। ঘুড়িটি কি হলো অবশ্যই মাটিতে নেমে এলো। জীবনের ক্ষেত্রেও একথা সত্য কখনো কখনো যা আমাদের নিচের দিকে টেনে নামাচ্ছে মনে হয় সেটিই কিন্তু আমদের উড়তে সাহাজ্য করছে।
🕮একজন লোক মেলায় লাল-নিল-সবুজ ইত্যাদি অনেক রঙয়ের বেলুন বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো । কখনো কখনো তার বিক্রি কমে গেলে সে হিলিয়াম গ্যাসে ভর্তি একটি বেলুন আকাসে উড়িয়ে দিত। বেলুনটিকে আকাশে উড়তে দেখে উৎসাহী বাচ্চারা বেলুনগুলোর কাছে ভিড় করে তার বিক্রি বাড়িয়ে দিত। সারাদিন এই পদ্ধতিতে বেলুন বিক্রি করত । একদিন পিছন থেকে জামায় টান পরাতে বেলুনয়ালা মুখফিরিয়ে দেখল একটা বাচ্চা ছেলে । বাচ্চা ছেলেটি বলল “কালো রঙয়ের বেলুন কি আকাশে ঊরে?” বালকটির অত্তাধিক আগ্রহ লক্ষ্য করে লোকটি তাকে আশ্বস্তকরে বলল, “ভাই , রঙয়ের জন্য আকাশে ঊরে না , বেলুনের ভিতরের গ্যাস বেলুনকে আকাশে উড়ায়”।
আমাদের জিবনেও একথা সত্য । আমাদের ভিতরে কি আছে সেইটাই প্রধান। আমাদের ভিতরের যে জিনিসটি আমাদের উপরে উঠতে সাহায্য করবে তা হল আমাদের মানসিকতা। আমরা যদি মানসিকতা ঠিক করে একটা সিন্ধান্তে উপনীতহই যে আমি ইহা পারবোই। তাহলে আপনি দেখবেন যে আপনি সেই কাজে সফল।
যেকোনো কাজে আপনি প্রথমে পরাজিত হতে পারেন,কিন্তু এর অর্থ এই না যে আপনি পারবেন না। আমেরিকা প্রক্তন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন জিবনে অনেক বারপরাজিত হয়েছেন। তার পরাজয়ের কাহিনী নিম্নরূপঃ
২১ বছর বয়সে তিনি বিজনেসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২২ বছর বয়সে আইন সভার নির্বাচনে পরাস্ত হন।
আবার ২৪ বছর বয়সে তিনি বিজনেসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২৬ বছর বয়সে তার প্রিয়তমা মারা যায়।
৩৪ বছর বয়সে তিনি কংগ্রেস নির্বাচনে পরাস্ত হন।
৪৫ বছর বয়সে তিনি সাধারন নির্বাচনে পরাস্ত হন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার চেষ্টায় নিরাস হন ৪৭ বছর বয়েসে ।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিতহন ৫২ বছর বয়েসে ।
একেই কি ব্যর্থ বলে? না। আব্রাহাম লিংকন এর মতে “পরাজয়মানে সমাপ্তি নয়,যাত্রা একটু দীর্ঘ হয় মাত্র”।
বিজয়ীরা সবসময় যেকোনো সমস্যা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত ।বিজয়ী দের আচারন নিচে দেয়া হলঃ
বিজয়ী বনাম বিজত
*বিজয়ীরা সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন
বিজিতরা প্রশ্নের সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
*বিজয়ীদের একটি কার্যক্রম থাকে,
বিজিতদের থাকে সব বিষয়ে অজুহাত।
*বিজয়ীরা বলেন তোমার হয়ে কাজটা করে দিচ্ছি
বিজিতরা বলেন এটা আমার কাজ নয়।
*বিজয়ীরা বলেন কাজটা কঠিন কিন্তু করা সম্ভব,
বিজিতরা বলেন কাজটা করা গেলেও খুব কঠিন।
*বিজয়ীরা বলেন আমি অবশ্যই কিছু করবো
বিজিতরা বলেৎ “কিছু করা উচিৎ”
নিজের বিবেককে প্রশ্ন করেন,আপনি বিজয়ী না বিজিত?
জন নামে এক কাঠুরে একটি সংস্থায় ৫ বছর কাজ করার পরও তারমাইনে বাড়েনি । সেই সংস্থায় বিল নামে এক কাঠুরেকে কাজে লাগাল এবং এক বছরের মধ্যে তার মাইনে বাড়িয়ে দিল । জন রাগান্বিত হয়ে তার উপর অয়ালার কাছে গিয়ে ব্যাপারটা জানতে চাইল। উপরওয়ালা বলল “পাচ বছর আগে তুমি যে পরিমাণ কাঠ কাটতে আজও তাই কাঠছো । তুমি যদি তোমারকাঠ কাটার ক্ষমতা বাড়াতে তাহলেআমরাও তোমার মাইনে বাড়িয়ে দিব।জন ফিরে গিয়ে কাঠ কাটা আরাম্ভ করল। কিন্তু অনেক বেশি সময় ব্যয় করে, এবং সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করেও সে আগের থেকে বেশি গাছ কাটতে পারলো না। তখন সে উপরঅলার কাছে গিয়ে সমস্যার কথাজানাল ।উপরঅলা পরামর্শ দিল বিলের সঙ্গে কথা বলতে। বিলের হয়ত কিছু কায়দা কানুন জানা আছে এই ভেবে জন বিলকে জিজ্ঞেস করল সে এত বেশি কাঠ কাটে কিভাবে? বিল উত্তরে বলল বলল, “প্রত্যেকটি গাছ কাটার পর আমি দুই মিনিটের বিরতি নিয়ে আমার কুড়ালটিকে শাণ দেই। তুমি তোমারকুড়ালে শেষবার কখন শাণ দিয়েছ? এই প্রশ্নটি জনের চোখ খুলে দিল এবং সে তার সব প্রশ্নের উত্তর খুজে পেল ।
এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্তপূর্ণ । “ তুমি শেষবার কখন তোমার অস্রে শাণ দিয়েছ?”
তাই আমাদের যে কোন কাজ শুরু করার আগে প্রস্তুতিটা ভাল ভাবেনিতে হবে।
আমাদের দেহে পুষ্টির জন্য যেমনভাল খাবারের প্রয়জন তেমনি মানসিক উন্নতির জন্য প্রত্যহ সৎ চিন্তার প্রয়জন। ভাল খাবারের বদলে খারাপ খাবার খেলেযেমন শরীর অসুস্থ হবে তেমনি সৎ চিন্তা না করলে মনও অসুস্থ হবে। তাই আমাদের সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে।
“ একটা ভাল কাজের চিন্তা করলে ১০ টা ভাল কাজ এসে যোগ দেয়,আর একটা খারাপ চিন্তা করলে ১০ টা খারাপ চিন্তা যোগ দেয়” । তাই আমাদের সকলের উচিৎ খারাপ চিন্তা বাদ দিয়ে ভাল চিন্তা করা ।
সাফল্যর জন্য জরুরিঃ
• জেতার জন্য খেলবেন, হারার জন্য নয়।
• অন্যের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন।
• উন্নত নৈতিক চরিত্রের মানুষের সঙ্গে মেলামেসা করুন।
• যা অপরের নিকট পান, তার চেয়ে বেশি দিন।
• উদ্দেশ্যহীনভাবে কোন জিনিসের সন্ধান করবেন না।
• দীর্ঘ মেয়াদী চিন্তা করুন।
• নিজের শক্তি জাচাই করে তার উপর ভরসা রাখুন।
• সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় বড় লক্ষ্যের দিকে দৃষ্টি দেন।
• সততার বিষয়ে কোনভাবে আপস করবেন না।
📝 ইন্টারনেট হতে সংগৃহীত 

No comments

Powered by Blogger.