কর্পোরেট জব পাওয়ার জন্য নেটওয়ার্কিং করবেন কিভাবে?
কর্পোরেট জব পাওয়ার জন্য নেটওয়ার্কিং করবেন কিভাবে?
অনলাইনে যারা একটিভ আছেন তারা প্রায় সময়ই হয়ত খেয়াল করবেন, অনেকেই নেটওয়ার্কিং করার ব্যাপারে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। আজ কাল ভালো কর্পোরেট জব পাওয়ার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু কিভাবে আপনি নেটওয়ার্কিং করবেন সেটা নিয়ে হয়ত কনফিউশনে আছেন। আবার অনেকেই মনে করছেন, আমিতো অনেকের সাথে ফেসবুক বা লিংকডইনে সংযুক্ত হয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছি। হুম, আপনি ফেসবুক বা লিংকডইনে কিছু ব্যক্তিদের সাথে যুক্ত হয়েছেন মাত্র, কিন্তু শক্ত বন্ডিং তৈরি করতে পারেন নি। কিভাবে শক্ত বন্ডিং তৈরি করবেন বা ইনিশিয়াল নেটওয়ার্কিং শুরু করবেন তার কিছু হ্যাক টেকনিক জানলে আপনি খুব সহজেই ভালো নেটওয়ার্কিং করে নিজেকে সাফল্য এনে দিতে পারবেন।
নেটওয়ার্কিং করার জন্য আপনাকে তিনটা ধাপ পরিপূর্ণ ভাবে অতিক্রম করে যেতে হবে।
প্রথম বা বেসিক ধাপঃ
ফেসবুক এবং লিংকডইনে অবশ্যই একটা করে আইডি থাকতে হবে। আইডি – তে কোনভাবেই গাছ পালা, ফুল, ফল, পশু পক্ষী, চাঁদনী রাতের ঘুম বা ভেইগ কোন কিছুকে আপনার নাম হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। আপনার সঠিক নামটি ব্যবহার করুন। ফেসবুক এবং লিংকডইন প্রোফাইল পরিপূর্ণ করুন। কোথায় পড়াশুনা করেছেন, ট্রেনিং করেছেন, স্বেচ্ছাসেবীর কাজ করেছেন ইত্যাদি গুছিয়ে প্রেজেন্টেবল ওয়েতে লিখে দিন। ফেসবুক এবং লিংকডইনে একটা অপশন আছে, অন্যরা আপনার প্রোফাইল কিভাবে দেখতে পাবে তার ভিউ। ওটা খুঁজে বের করুন এবং দেখুন আপনার প্রোফাইলটা কেমন দেখাচ্ছে। এরপর আপনি যে ধরণের কোম্পানিতে কাজ করতে চান সে কোম্পানির ভালো ভালো পদে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তিদের প্রোফাইলের সাথে নিজের প্রোফাইলটা একটু তুলনা করে নিন। তার সাপেক্ষে আপনার বয়স অনুসারে মানানসই হলে ঠিক আছে। ফেসবুকের ক্ষেত্রে – আপনি স্কুল, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে প্রেজেন্টেশন গুলো করেছেন তার কিছু সুন্দর ও মার্জিত ছবি সংযুক্ত করুন। কোথাও সেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ করলে সেখানের কিছু ছবি দিন। কোথাও ট্রেনিং করে থাকলে বা করিয়ে থাকলে সেখানের ছবি গুলো সংযুক্ত করুন। বিভিন্ন শিক্ষামূলক সেমিনারে অংশগ্রহণের ছবি দিতে পারলে আরও ভালো হয়। কোন ধরণের আলতু ফালতু ছবি নিজে সংযুক্ত করবেন না এবং কোন বন্ধুকেও ট্যাগ করতে দিবে না। নিয়মিত বা সাপ্তাহিক শিক্ষামূলক পোস্ট শেয়ার করুন। নিজেই পোস্ট লিখতে হবে ব্যাপারটা এমন নয়, অন্য কারো পোস্ট শেয়ার করুন। আর নিজে লিখতে পারলে তো খুবই ভালো কথা। আপনি যে পোস্ট গুলো করবেন সেগুলোতে বানান ঠিকভাবে লিখুন। ভুলেও কোন ফালতু (আজাইরা) পোস্ট দিবেন না। কারো ব্যাপারে কোন বাজে কমেন্ট করবেন না। কোন পোস্টে কমেন্ট করতে হলে গঠনমূলক কমেন্ট করুন। আক্রমণাত্মক কমেন্ট কিছুতেই করা যাবে না। যাদের প্রোফাইল এভাবে সাজানো নেই তারা প্রথমে নিজেদের প্রোফাইল গুছিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে নিন।
দ্বিতীয় বা নেটওয়ার্কিং ধাপঃ
আপনি যে এমএনসি বা অন্য কোন কর্পোরেট কোম্পানিতে কাজ করতে চান তাদের এমপ্লয়িদের মধ্যে যারা ফেসবুক বা লিংকডইনে মোটামুটি একটিভ তাদের প্রোফাইল খুঁজে বের করুন। প্রথমেই তাদের ফ্রেন্ড বা কানেকশন রিকোয়েস্ট পাঠাবেন না। প্রথমে তাদের ফলো করুন। তাদের দেয়া পোস্ট গুলোতে একটু ডিপ থিংক করে ছোট ছোট কমেন্ট করুন। সুন্দর কমেন্ট, নাইস লেখা, আসলেই তাই, আপনি ঠিকই বলেছেন… ইত্যাদি টাইপের কমেন্ট না। কমেন্ট হবে একটু ডিপ থিংক টাইপের। আপনার কমেন্ট পড়ে যেন সে বুঝতে পারে আপনি তার পোস্ট নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করেছেন। সোজা কথায় আপনি তার মতামতের খুব গুরুত্ব দিয়েছেন। যেহেতু আপনি তাদেরকে ফলো করে রেখেছেন তাই নিয়মিত তাদের থেকে পোস্ট আপনার কাছে আসতে থাকবে এবং আপনি নিয়মিত তাদের পোস্টে ডিপ থিংক করা কমেন্ট করবেন। যখন দেখবেন তিনি আপনার কমেন্টের ব্যাপারে ভালো ভালো কমেন্ট করা শুরু করেছেন তখন তাকে ফ্রেন্ড বা কানেকশন রিকোয়েস্ট পাঠান। এ অবস্থায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার সম্ভাবনা থাকে। আর মনে রাখবেন, তিনি আপনার রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার আগে অবশ্যই আপনার প্রোফাইল ভালো করে দেখবেন। কারণ আপনার কোয়ালিটি, রুচিবোধ, কথাবার্তার ধরণের কারণে তাকে ভবিষ্যতে কোন সমস্যায় পড়তে হবে কিনা তিনি সেটা নিশ্চিত হয়ে তারপর আপনাকে ফ্রেন্ড বানাবেন। এ কারনেই প্রাথমিক ধাপটা আপনাকে অবশ্যই ঠিকভাবে অতিক্রম করে আসতে হবে। এভাবে অনেক কর্পোরেট পার্সনদের সাথে আপনার নিয়মিত ভার্চুয়ালি যোগাযোগ হতে থাকলে আপনি তাদের কাছে আস্তে আস্তে পরিচিত হয়ে উঠবেন। একবার ভাবুন তো, আপনি যার সাথে নিয়মিত ভার্চুয়ালি যোগাযোগ রাখছেন সেই একদিন সামনাসামনি বসে ইন্টার্ভিউ নিচ্ছে। একজন অপরিচিত ব্যক্তি আর একজন পরিচিত ব্যক্তির কাছে ইন্টার্ভিউ দিয়ে ফেভার পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু সেটি সহজেই অনুমেন। ইন্টার্ভিউ ব্যাপারটা ছাড়াও, আপনি কর্পোরেট পার্সনদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে তাদের ধ্যান ধারণা কেমন, তারা একজন ক্যান্ডিডেট এর মধ্যে কি ধরণের স্কিল সেট দেখতে চান, কখন তারা কোন একটা ক্যান্ডিডেটকে ডিসকোয়ালিফাই করেন ইত্যাদি ব্যাপার গুলোর সম্পর্কে আপনি পরিস্কার ধারণা পাবেন। ঐ ব্যাপার গুলো প্রায় সকল কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে একই।
টার্সিয়ারি বা রিয়েল ধাপঃ
পড়ালেখা শেষের দিকে অনেকেরই ইন্টার্ন করতে হয়। আপনার সাথে ভালো ভালো কর্পোরেট কোম্পানির উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিদের সাথে ভার্চুয়ালি সুসম্পর্ক থাকলে, আপনার ইন্টার্ন করা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। দশ জনের কাছে রিকোয়েস্ট পাঠান। কেউনা কেউ সুযোগ করে দিবে। তখন তার সাথে দেখা করুন। নিজের ব্যাপারে আরও জানান। বিডি জবস, ওয়ার্ড ট্রেনিং, কর্পোরেট আস্ক, এইচ আর ডেস্ক …… ইত্যাদি কোম্পানি গুলো নিয়মিত ট্রেনিং করায়। আপনার কাজ রিলেটেড কিছু ট্রেনিং এ অংশগ্রহণ করুন। আপনি যদি এখনও নিশ্চিত হতে না পারেন আপনার ক্যারিয়ার কোন দিকে নিতে চান তাহলে লিডারশীপ, মাইক্রোসফট এক্সেল এডভান্স প্যাকেজ, IELTS, ইত্যাদি কমন জিনিস গুলো শিখতে যান। ওখানে দেখবেন কত বড় বড় কর্পোরেট হাউসের টিম মেম্বাররা এসেছেন ট্রেনিং নিতে। তাদের সাথে সুন্দর ভাবে পরিচিত হন। ফেসবুক, লিংকডইন ইত্যাদিতে যুক্ত হয়ে যান। সেকেন্ড ধাপের কিছু ট্রিক্স কাজে লাগান।
আপনার মামা, চাচা, খালা ফুফা নেই তো কি হয়েছে! উপরের পদ্ধতি মাস ছয় থেকে একবছর চালিয়ে যান। আপনি যদি সবকিছু ঠিকভাবে মেইন্টেন করতে পারেন তাহলে তারা মামা, চাচা, খালা আর ফুফার চেয়েও বেশি করবে আপনার জন্য। তবে একটা ব্যাপার মাথায় ভালোভাবে গেঁথে নিন, আপনার মাথায় কিন্তু পর্যাপ্ত ঘিলু থাকতে হবে। কর্পোরেট অফিস গুলো আপনার মাথার ঘিলুর জন্য আপনাকে পয়সা দিবে। যতই নেটওয়ার্কিং করেন না কেন, যদি আপনার মাথায় ঘিলু না থাকে তাহলে কেউ আপানাকে জবের জন্য রেফার করবে না। কর্পোরেট পিপলরা কাউকে জবের জন্য রেফার করার আগে অনেক ভেবে চিন্তে দেখেন, যাকে ফেরার করবো সে আমার মানসম্মান ডুবাবে না তো! আর কেউ যদি দয়াপরবশ হয়ে রেফার করেও কিন্তু কিছু দিনের মাথায় আপনি ঘিলুর ওভাবে কর্পোরেট হাউজে হাবু ডুবু খেতে থাকবেন।
শেষ কথা, সুন্দর ভাবে নেটওয়ার্কিং করুন। নিজেকে মার্কেটের জন্য কম্পিটিটিভ করে গড়ে তুলুন। “অন্যদের তো এতো কিছু করা লাগে নি, ওরা এতো উপরে উঠল কিভাবে?” – এসব ফালতু চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। অন্যদের হয়ত আগে থেকেই জ্যাক ছিল, যেই জ্যাকটা বর্তমানে আপনার হাতে নেই। আপনি যদি বুদ্ধিমান হন, তাহলে আজ থেকেই নিজের জ্যাক নিজে তৈরির জন্য ঝাপিয়ে পড়ুন। সাফল্য তো শুধু কিছু সময়ের ব্যবধান মাত্র।
অনলাইনে যারা একটিভ আছেন তারা প্রায় সময়ই হয়ত খেয়াল করবেন, অনেকেই নেটওয়ার্কিং করার ব্যাপারে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। আজ কাল ভালো কর্পোরেট জব পাওয়ার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু কিভাবে আপনি নেটওয়ার্কিং করবেন সেটা নিয়ে হয়ত কনফিউশনে আছেন। আবার অনেকেই মনে করছেন, আমিতো অনেকের সাথে ফেসবুক বা লিংকডইনে সংযুক্ত হয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছি। হুম, আপনি ফেসবুক বা লিংকডইনে কিছু ব্যক্তিদের সাথে যুক্ত হয়েছেন মাত্র, কিন্তু শক্ত বন্ডিং তৈরি করতে পারেন নি। কিভাবে শক্ত বন্ডিং তৈরি করবেন বা ইনিশিয়াল নেটওয়ার্কিং শুরু করবেন তার কিছু হ্যাক টেকনিক জানলে আপনি খুব সহজেই ভালো নেটওয়ার্কিং করে নিজেকে সাফল্য এনে দিতে পারবেন।
নেটওয়ার্কিং করার জন্য আপনাকে তিনটা ধাপ পরিপূর্ণ ভাবে অতিক্রম করে যেতে হবে।
প্রথম বা বেসিক ধাপঃ
ফেসবুক এবং লিংকডইনে অবশ্যই একটা করে আইডি থাকতে হবে। আইডি – তে কোনভাবেই গাছ পালা, ফুল, ফল, পশু পক্ষী, চাঁদনী রাতের ঘুম বা ভেইগ কোন কিছুকে আপনার নাম হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। আপনার সঠিক নামটি ব্যবহার করুন। ফেসবুক এবং লিংকডইন প্রোফাইল পরিপূর্ণ করুন। কোথায় পড়াশুনা করেছেন, ট্রেনিং করেছেন, স্বেচ্ছাসেবীর কাজ করেছেন ইত্যাদি গুছিয়ে প্রেজেন্টেবল ওয়েতে লিখে দিন। ফেসবুক এবং লিংকডইনে একটা অপশন আছে, অন্যরা আপনার প্রোফাইল কিভাবে দেখতে পাবে তার ভিউ। ওটা খুঁজে বের করুন এবং দেখুন আপনার প্রোফাইলটা কেমন দেখাচ্ছে। এরপর আপনি যে ধরণের কোম্পানিতে কাজ করতে চান সে কোম্পানির ভালো ভালো পদে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তিদের প্রোফাইলের সাথে নিজের প্রোফাইলটা একটু তুলনা করে নিন। তার সাপেক্ষে আপনার বয়স অনুসারে মানানসই হলে ঠিক আছে। ফেসবুকের ক্ষেত্রে – আপনি স্কুল, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে প্রেজেন্টেশন গুলো করেছেন তার কিছু সুন্দর ও মার্জিত ছবি সংযুক্ত করুন। কোথাও সেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ করলে সেখানের কিছু ছবি দিন। কোথাও ট্রেনিং করে থাকলে বা করিয়ে থাকলে সেখানের ছবি গুলো সংযুক্ত করুন। বিভিন্ন শিক্ষামূলক সেমিনারে অংশগ্রহণের ছবি দিতে পারলে আরও ভালো হয়। কোন ধরণের আলতু ফালতু ছবি নিজে সংযুক্ত করবেন না এবং কোন বন্ধুকেও ট্যাগ করতে দিবে না। নিয়মিত বা সাপ্তাহিক শিক্ষামূলক পোস্ট শেয়ার করুন। নিজেই পোস্ট লিখতে হবে ব্যাপারটা এমন নয়, অন্য কারো পোস্ট শেয়ার করুন। আর নিজে লিখতে পারলে তো খুবই ভালো কথা। আপনি যে পোস্ট গুলো করবেন সেগুলোতে বানান ঠিকভাবে লিখুন। ভুলেও কোন ফালতু (আজাইরা) পোস্ট দিবেন না। কারো ব্যাপারে কোন বাজে কমেন্ট করবেন না। কোন পোস্টে কমেন্ট করতে হলে গঠনমূলক কমেন্ট করুন। আক্রমণাত্মক কমেন্ট কিছুতেই করা যাবে না। যাদের প্রোফাইল এভাবে সাজানো নেই তারা প্রথমে নিজেদের প্রোফাইল গুছিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে নিন।
দ্বিতীয় বা নেটওয়ার্কিং ধাপঃ
আপনি যে এমএনসি বা অন্য কোন কর্পোরেট কোম্পানিতে কাজ করতে চান তাদের এমপ্লয়িদের মধ্যে যারা ফেসবুক বা লিংকডইনে মোটামুটি একটিভ তাদের প্রোফাইল খুঁজে বের করুন। প্রথমেই তাদের ফ্রেন্ড বা কানেকশন রিকোয়েস্ট পাঠাবেন না। প্রথমে তাদের ফলো করুন। তাদের দেয়া পোস্ট গুলোতে একটু ডিপ থিংক করে ছোট ছোট কমেন্ট করুন। সুন্দর কমেন্ট, নাইস লেখা, আসলেই তাই, আপনি ঠিকই বলেছেন… ইত্যাদি টাইপের কমেন্ট না। কমেন্ট হবে একটু ডিপ থিংক টাইপের। আপনার কমেন্ট পড়ে যেন সে বুঝতে পারে আপনি তার পোস্ট নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করেছেন। সোজা কথায় আপনি তার মতামতের খুব গুরুত্ব দিয়েছেন। যেহেতু আপনি তাদেরকে ফলো করে রেখেছেন তাই নিয়মিত তাদের থেকে পোস্ট আপনার কাছে আসতে থাকবে এবং আপনি নিয়মিত তাদের পোস্টে ডিপ থিংক করা কমেন্ট করবেন। যখন দেখবেন তিনি আপনার কমেন্টের ব্যাপারে ভালো ভালো কমেন্ট করা শুরু করেছেন তখন তাকে ফ্রেন্ড বা কানেকশন রিকোয়েস্ট পাঠান। এ অবস্থায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার সম্ভাবনা থাকে। আর মনে রাখবেন, তিনি আপনার রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার আগে অবশ্যই আপনার প্রোফাইল ভালো করে দেখবেন। কারণ আপনার কোয়ালিটি, রুচিবোধ, কথাবার্তার ধরণের কারণে তাকে ভবিষ্যতে কোন সমস্যায় পড়তে হবে কিনা তিনি সেটা নিশ্চিত হয়ে তারপর আপনাকে ফ্রেন্ড বানাবেন। এ কারনেই প্রাথমিক ধাপটা আপনাকে অবশ্যই ঠিকভাবে অতিক্রম করে আসতে হবে। এভাবে অনেক কর্পোরেট পার্সনদের সাথে আপনার নিয়মিত ভার্চুয়ালি যোগাযোগ হতে থাকলে আপনি তাদের কাছে আস্তে আস্তে পরিচিত হয়ে উঠবেন। একবার ভাবুন তো, আপনি যার সাথে নিয়মিত ভার্চুয়ালি যোগাযোগ রাখছেন সেই একদিন সামনাসামনি বসে ইন্টার্ভিউ নিচ্ছে। একজন অপরিচিত ব্যক্তি আর একজন পরিচিত ব্যক্তির কাছে ইন্টার্ভিউ দিয়ে ফেভার পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু সেটি সহজেই অনুমেন। ইন্টার্ভিউ ব্যাপারটা ছাড়াও, আপনি কর্পোরেট পার্সনদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে তাদের ধ্যান ধারণা কেমন, তারা একজন ক্যান্ডিডেট এর মধ্যে কি ধরণের স্কিল সেট দেখতে চান, কখন তারা কোন একটা ক্যান্ডিডেটকে ডিসকোয়ালিফাই করেন ইত্যাদি ব্যাপার গুলোর সম্পর্কে আপনি পরিস্কার ধারণা পাবেন। ঐ ব্যাপার গুলো প্রায় সকল কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে একই।
টার্সিয়ারি বা রিয়েল ধাপঃ
পড়ালেখা শেষের দিকে অনেকেরই ইন্টার্ন করতে হয়। আপনার সাথে ভালো ভালো কর্পোরেট কোম্পানির উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিদের সাথে ভার্চুয়ালি সুসম্পর্ক থাকলে, আপনার ইন্টার্ন করা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। দশ জনের কাছে রিকোয়েস্ট পাঠান। কেউনা কেউ সুযোগ করে দিবে। তখন তার সাথে দেখা করুন। নিজের ব্যাপারে আরও জানান। বিডি জবস, ওয়ার্ড ট্রেনিং, কর্পোরেট আস্ক, এইচ আর ডেস্ক …… ইত্যাদি কোম্পানি গুলো নিয়মিত ট্রেনিং করায়। আপনার কাজ রিলেটেড কিছু ট্রেনিং এ অংশগ্রহণ করুন। আপনি যদি এখনও নিশ্চিত হতে না পারেন আপনার ক্যারিয়ার কোন দিকে নিতে চান তাহলে লিডারশীপ, মাইক্রোসফট এক্সেল এডভান্স প্যাকেজ, IELTS, ইত্যাদি কমন জিনিস গুলো শিখতে যান। ওখানে দেখবেন কত বড় বড় কর্পোরেট হাউসের টিম মেম্বাররা এসেছেন ট্রেনিং নিতে। তাদের সাথে সুন্দর ভাবে পরিচিত হন। ফেসবুক, লিংকডইন ইত্যাদিতে যুক্ত হয়ে যান। সেকেন্ড ধাপের কিছু ট্রিক্স কাজে লাগান।
আপনার মামা, চাচা, খালা ফুফা নেই তো কি হয়েছে! উপরের পদ্ধতি মাস ছয় থেকে একবছর চালিয়ে যান। আপনি যদি সবকিছু ঠিকভাবে মেইন্টেন করতে পারেন তাহলে তারা মামা, চাচা, খালা আর ফুফার চেয়েও বেশি করবে আপনার জন্য। তবে একটা ব্যাপার মাথায় ভালোভাবে গেঁথে নিন, আপনার মাথায় কিন্তু পর্যাপ্ত ঘিলু থাকতে হবে। কর্পোরেট অফিস গুলো আপনার মাথার ঘিলুর জন্য আপনাকে পয়সা দিবে। যতই নেটওয়ার্কিং করেন না কেন, যদি আপনার মাথায় ঘিলু না থাকে তাহলে কেউ আপানাকে জবের জন্য রেফার করবে না। কর্পোরেট পিপলরা কাউকে জবের জন্য রেফার করার আগে অনেক ভেবে চিন্তে দেখেন, যাকে ফেরার করবো সে আমার মানসম্মান ডুবাবে না তো! আর কেউ যদি দয়াপরবশ হয়ে রেফার করেও কিন্তু কিছু দিনের মাথায় আপনি ঘিলুর ওভাবে কর্পোরেট হাউজে হাবু ডুবু খেতে থাকবেন।
শেষ কথা, সুন্দর ভাবে নেটওয়ার্কিং করুন। নিজেকে মার্কেটের জন্য কম্পিটিটিভ করে গড়ে তুলুন। “অন্যদের তো এতো কিছু করা লাগে নি, ওরা এতো উপরে উঠল কিভাবে?” – এসব ফালতু চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। অন্যদের হয়ত আগে থেকেই জ্যাক ছিল, যেই জ্যাকটা বর্তমানে আপনার হাতে নেই। আপনি যদি বুদ্ধিমান হন, তাহলে আজ থেকেই নিজের জ্যাক নিজে তৈরির জন্য ঝাপিয়ে পড়ুন। সাফল্য তো শুধু কিছু সময়ের ব্যবধান মাত্র।
No comments