পেশার নাম হেড হান্টিং (Head Hunting) : সমস্যা, সম্ভাবনা ও সংকট
পেশার নাম হেড হান্টিং (Head Hunting) : সমস্যা, সম্ভাবনা ও সংকট
সময়ের প্রয়োজনে যুগে যুগে কতই না পেশার উদ্ভব ঘটেছে। কর্পোরেট অঙ্গনে তুলনামূলক কম প্রচলিত, কিন্তু অতীব দরকারি তেমনি এক পেশার নাম হেড হান্টিং। আমাদের দেশেও ক্রমে এই পেশাটি সম্প্রসারিত হচ্ছে। কর্পোরেট পেশাজীবী মাত্রই এখন ‘হেড হান্টিং’ শব্দদ্বয়ের সঙ্গে পরিচিত, যদিও অনেকেরই এ সম্পর্কে বিশদ ধারণার ঘাটতি রয়েছে।
আমার এই লেখাটির উদ্দেশ্য হেড হান্টিং কী ও কেন এবং হেড-হান্টার (ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান) কিভাবে কাজ করেন, সে ব্যাপারে একটু বিস্তারিত আলোচনা করা। আমার অনুরোধ- সবাই ধৈর্য ধরে পুরো লেখাটি পড়বেন। তাহলে আপনাদের জানা/বোঝার ঘাটতি থাকলে ভ্রান্তিগুলো দূর হবে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে আপনারাও এই সেবা নিয়ে উপকৃত হতে পারবেন।
যে কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য চাই যোগ্য মানুষ। মুশকিল হচ্ছে- পৃথিবীতে মানুষের অভাব না থাকলেও সঠিক অবস্থানে যোগ্য মানুষের বড্ড অভাব। ওদিকে অনেক যোগ্য লোক তাঁর যোগ্যতার সঠিক মূল্যায়ণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কারণ তিনি হয়ত সঠিক জায়গা পর্যন্ত পৌঁছতেই পারেননি। তার মানেটা দাঁড়ালো এই যে, অনেক সময় কোম্পানিগুলো জানে না- তাদের দরকার অনুযায়ী সঠিক লোককে কোথায় পাওয়া যাবে আবার সঠিক লোক জানেন না- কোথায় গেলে তাঁর যোগ্যতার সঠিক মূল্যায়ণ হবে তথা নায্য সম্মানী পাবেন।
এই যে উভয়পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ-হীনতা, একজন পেশাদার হেড হান্টার বা তাঁর হেড হান্টিং ফার্ম এই যোগসূত্রটাই ঘটিয়ে দেন। যাতে যোগ্য লোক মনের মতো চাকরি খুঁজে পান আর কোম্পানি খুঁজে পায় চাহিদা/প্রত্যাশা অনুযায়ী যোগ্য লোক। এই কাজের বিনিময়ে হেড হান্টার বা তাঁর হেড হান্টিং ফার্ম চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক পান (প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে যোগদান না করা পর্যন্ত অবশ্য কোনো আয় হয় না)!
অনেকে মনে করেন- হেড হান্টারের কাজটা বোধহয় খুবই সোজা। প্রার্থী যেনতেনভাবে নির্বাচিত হলেই তো এক/দেড় মাসের বেতনের সমপরিমাণ টাকা পারিশ্রমিক! ব্যাপারটা ভাবতে মজা লাগলেও বাস্তবে অতটা সহজ নয়; হেড হান্টারকে অনেক দিকে খেয়াল রেখে কাজ করতে হয়। অনেক খুঁজে সঠিক প্রার্থী বাছাই করতে হয় এবং সবচেয়ে যেটা ঝুঁকিপূর্ণ, তাহলো চাকরিতে যোগদান না করলে একটা টাকাও আয় হয় না। অনেক সময় পুরো প্রক্রিয়াই পণ্ডশ্রমে পরিণত হয়- এটা জেনে ও মেনে নিয়েই হেড হান্টাররা কাজ করেন।
এবারে আসি তাঁদের কর্মপ্রক্রিয়ায়। হেড হান্টার-এর প্রাথমিক যোগ্যতা হলো কর্পোরেট জগত সম্পর্কে সুগভীর ও সুবিস্তৃত ধারণা রাখা। কে, কোথায়, কী পদে, কতদিন ধরে কর্মরত আছেন, এর আগে কোন কোম্পানিতে কতদিন, কোন পদে ছিলেন, কার কী পেশাগত সাফল্য/ব্যর্থতা, কার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কতখানি এবং কোন কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন, কার বাড়ি কোথায়, কে দেশের কোন প্রান্তে কতদিন কর্মরত ছিলেন, সর্বোপরি কে কত টাকা বেতন-ভাতা/সম্মানী ও সুযোগ-সুবিধা পান, সে ব্যাপারে সম্যক ধারণা রাখতে হয়।
যে হেড হান্টার কর্পোরেট জগত সম্পর্কে যত বেশি খোঁজ-খবর রাখেন, তাঁর ব্যবসায়িক সম্ভাবনা তত বেশি। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কিং যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি সঠিক তথ্যের ভাণ্ডারও সংরক্ষণ করা জরুরি। সে তথ্যভাণ্ডার আবার নিয়মিত যুগোপযোগী (up-to-date) করতে হয়।
সাধারণত হেড হান্টার ফার্মগুলোতে এক বা একাধিক ব্যক্তি সিভি-ভাণ্ডার সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকেন। অনেক পেশাজীবী ভালো চাকরির প্রত্যাশায় হেড হান্টিং ফার্ম-এ সিভি জমা দিয়ে রাখেন। অনেক সময় হেড হান্টাররাও সুপরিচিত/সুপ্রতিষ্ঠিত কর্পোরেট ব্যক্তিত্বদের সিভি চেয়ে নেন। যেভাবেই সংগ্রহ হোক না কেন, সিভিগুলো প্রার্থীদের পদ/অভিজ্ঞতা/বিশেষ যোগ্যতা/প্রাপ্ত সম্মানী/প্রত্যাশিত সম্মানী ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে শ্রেণীবিন্যাস করে রাখা হয়, যাতে দরকারি মুহূর্তে কোম্পানিগুলোর চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে সঠিক প্রার্থীকে দ্রুত খুঁজে বের করা যায়।
এদিকে কোম্পানিগুলোতে যখন কোনো পদ শূন্য হয়, সিনিয়র লেভেল-এ নতুন কোনো পদ সৃষ্টি হয় অথবা মালিকপক্ষ/ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কাউকে প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন মানবসম্পদ বিভাগ থেকে অতীব গোপনীয়তায় (কারণ কেউ চায় না আগেভাগে ব্যাপক জানাজানি হয়ে যাক) হেড হান্টার বা তাঁর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে চাহিদাপত্র পেশ করা হয়। সাধারণত চাহিদাপত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকে :
• কোন পদের জন্য প্রার্থী দরকার?
• প্রার্থীর ন্যূনতম যোগ্যতা কী হবে?
• সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কত বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে?
• বিশেষ কোনো যোগ্যতা আবশ্যক কিনা?
• প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা/পৈতৃক বাড়ি/পেশাগত অভিজ্ঞতার কোনোরূপ বাছ-বিচার আছে কিনা?
• আর কোনো শর্ত প্রযোজ্য কিনা?
• সর্বোচ্চ কত টাকা পর্যন্ত বেতন/সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হতে পারে?
• প্রার্থীর ন্যূনতম যোগ্যতা কী হবে?
• সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কত বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে?
• বিশেষ কোনো যোগ্যতা আবশ্যক কিনা?
• প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা/পৈতৃক বাড়ি/পেশাগত অভিজ্ঞতার কোনোরূপ বাছ-বিচার আছে কিনা?
• আর কোনো শর্ত প্রযোজ্য কিনা?
• সর্বোচ্চ কত টাকা পর্যন্ত বেতন/সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হতে পারে?
হেড হান্টার এই চাহিদাপত্র পাওয়ার পর তাঁর সংরক্ষিত সিভি-ভাণ্ডারের সঙ্গে মিলিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের সিভি-গুলো বাছাই করেন। অনেক সময় উপযুক্ত প্রার্থীর সিভি সংগ্রহে না থাকলে নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও ব্যক্তিগত/পেশাগত যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত প্রার্থীদের খুঁজে বের করতে হয়। তাঁদেরকে সম্ভাব্য চাকরি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে সিভি জমা দিতে অনুরোধ করা হয়।
এভাবে কোম্পানির চাহিদার সঙ্গে পুরো কিংবা আংশিক মিলে যায়- এমন সিভিগুলো বাছাই করে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিতে পাঠানো হয়। কখনো কখনো সিভি পাঠানোর আগে হেড হান্টার প্রার্থীর dummy interview করে বোঝার চেষ্টা করেন যে, প্রার্থী মানসিকভাবে প্রস্তুত কিনা। ক্ষেত্রবিশেষে সিভি পুনঃলিখন (চাকরির চাহিদা অনুযায়ী)-এর প্রয়োজন হয়। তখন পেশাদার সিভি রাইটার-এর সহযোগিতা নিতে হয়।
এদিকে কোম্পানির মানবসম্পদ বিভাগ এক বা একাধিক হেড হান্টার ফার্ম থেকে সংগৃহীত এবং নিজস্ব যোগাযোগ সূত্রে (রেফারেন্স) প্রাপ্ত (যদি থাকে) সিভি-গুলো নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করে। তারপর তাদের প্রত্যাশার সঙ্গে মিলে যাওয়া পছন্দসই সিভিগুলো আলাদা করে সাক্ষাৎকার-এর জন্য প্রার্থীদের আমন্ত্রণ জানায়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হেড হান্টার-এর কার্যপরিধি এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু উন্নত বিশ্বে হেড হান্টারদের কর্মপরিধি আরো বিস্তৃত। হেড হান্টাররা কোম্পানিতে সিভি পাঠিয়েই বসে থাকেন না, তাঁদের প্রস্তাবিত প্রার্থী যেন short listed হন, অন্তত সাক্ষাৎকার-এর জন্য ডাক পান, সে লক্ষ্যে জোর তদ্বির (lobbing) চালানো হয়। হেড হান্টার পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার নেপথ্যে জোঁক-এর মতো লেগে থাকেন। বোঝার চেষ্টা করেন কার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা কতখানি? কারণ তিনি চান তাঁর মনোনীত প্রার্থী যেন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন (কেবলমাত্র তাহলেই মিলবে কাঙ্ক্ষিত পারিশ্রমিক)!
ডাক পাওয়ার পর হেড হান্টার প্রার্থীর সঙ্গে আবার বসেন; সাক্ষাৎকার মোকাবিলার জন্য তাঁকে সর্বোতভাবে প্রস্তুত করেন। একেক কোম্পানির সংস্কৃতি/স্টাইল/ধারা একেক রকম। একেক মালিকের পছন্দ-অপছন্দও ভিন্ন ভিন্ন। হেড হান্টার সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অন্দরমহলের খোঁজ-খবর নিয়ে প্রার্থীদের সেই মোতাবেক মানসিকভাবে প্রস্তুত করে তোলেন। সাক্ষাৎকারে কেমন পোশাক পড়ে যাবেন, কী বলতে হবে, কী বলা যাবে না- সেটা পর্যন্ত ঠিকঠাক করে দেন। প্রার্থী নির্বাচনে যাঁদের ভূমিকা থাকবে, তাঁদের উপর প্রভাব বিস্তারেরও চেষ্টা করেন।
এভাবে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর হেড হান্টার মনোনীত প্রার্থী যদি চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন, তাহলে তাঁর যে মাসিক সম্মানী নির্ধারিত হয়, তার সমপরিমাণ অথবা ক্ষেত্রবিশেষে দেড়গুণ টাকা নিয়োগকারী কোম্পানি হেড হান্টারকে তার পারিশ্রমিক বাবদ পরিশোধ করে। আর উন্নত বিশ্বে হেড হান্টাররা যেহেতু ডাক পাওয়ার পরও চাকরি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত দায়িত্ব (যা উপরে বলা হলো) পালন করেন, সেহেতু নির্বাচিত প্রার্থী চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথম মাসের সম্মানী হেড হান্টারকে দিয়ে দেন (যেটা আমাদের দেশে তেমনভাবে প্রচলিত নয়)। মোট কথা- হেড হান্টারের দায়িত্বের পরিধি যত বিস্তৃত, সম্মানীর পরিমাণ তত বেশি। কিন্তু প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে যোগ না দিলে একটি টাকাও পারিশ্রমিক জোটে না! এটাই এই পেশার সীমাবদ্ধতা।
এবার বলি আমাদের দেশের বাস্তবতায় হেড হান্টার পেশার সমস্যা ও সংকট সম্পর্কে। প্রথমত, ছোট থেকে বড় হওয়া দেশীয় মালিকেরা হেড-হান্টিং পেশাটার প্রয়োজন ও গুরুত্ব কোনোটাই বোঝেন না। তাঁরা ভালো লোক চান, যোগ্য লোক চান, কিন্তু বেতন দিতে চান কম! আবার মনে করেন- যখন তখন চাইলেই তো লোক পাওয়া যায়, হেড হান্টারকে এ কাজে নিয়োগ দিতে হবে কেন?
আমি বাংলাদেশের একটি অতি সুপরিচিত ও সুবৃহৎ কোম্পানির মালিকের মেয়ের কথা জানি, যিনি মানবসম্পদ বিভাগের প্রধানকে বলেছিলেন, আপনাকে তো অনেক টাকা বেতন দিয়ে নিয়েছি দরকার মতো যোগ্য লোক খুঁজে বের করার জন্যই; আবার হেড হান্টার লাগবে কেন? আর লাগলে আপনার কাজটা কী? মালিকের মেয়ের ধারণা- মানবসম্পদ বিভাগে কাজ করলেই বাংলাদেশের কর্পোরেট অঙ্গনের লাখ লাখ পেশাজীবীর সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতে ও জানতে হবে। মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মালিকের মেয়েকে বোঝাতে পারেননি যে, সঠিক লোক নির্বাচনের জন্য পেশাদার হেড হান্টারের সেবা বিশ্বজুড়েই সমাদৃত এবং মোটের উপর কোম্পানির জন্য লাভজনক ও অনেক সময় বাঁচায়।
এতো গেল মালিকপক্ষের অজ্ঞতার সমস্যা। তারচেয়েও বড় সমস্যা হলো- হেড হান্টিং পেশায় ঢোকার আগে হেড হান্টারের কমপক্ষে দশ বছর অন্তত তিনটি কোম্পানিতে চাকরি করার অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। তাহলে হেড হান্টার-এর পক্ষে কর্পোরেট সংস্কৃতি বোঝা ও যোগ্য লোক চেনা/খুঁজে বের করা সহজ হবে। কিন্তু আমাদের দেশে এমন যোগ্য পেশাদার হেড হান্টারের সংখ্যা হাতে গোনা।
অনেক হেড হান্টার-এরই নিজের চাকরির অভিজ্ঞতা/কর্পোরেট সংশ্লিষ্টতা নেই বললেই চলে (অপ্রিয় হলেও সত্য যে, কারো কারো সে যোগ্যতাও নেই!), কিন্তু হুটহাট হেড হান্টিং ফার্ম খুলে বসেছেন। ফলে তারা সঠিক লোক বাছাই করতে ব্যর্থ হচ্ছেন এবং হাতের কাছে থাকা সিভিগুলো এদিক-সেদিক করে কোম্পানির মানবসম্পদ বিভাগে পাঠিয়ে দেন। মানে নিজের যোগ্যতার ঘাটতি থাকায় সঠিক সিভি বাছাই করতে পারছেন না। ফলে যে উদ্দেশ্যে হেড হান্টিং পেশার প্রয়োজনীয়তা, অযোগ্য লোকের হাতে পড়ে মূল উদ্দেশ্যই ব্যহত হচ্ছে। এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে এক পর্যায়ে হেড হান্টিং পেশার প্রতিই আস্থা হারিয়ে ফেলে কোম্পানিগুলো, যা কিনা এই পেশার বিকাশের পক্ষে অন্তরায়।
বাংলাদেশে যে ক’টি সত্যিকারের পেশাদার হেড-হান্টার প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাঁদেরও কিছু সমস্যা আছে। ব্যবসা মোটামুটি জমিয়ে ফেলার পর তাঁরা আর আগের মতো মনোযোগী নন। ইদানীং নিজেরা না খেটে স্বল্প বেতনের জুনিয়র/আনাড়ী ছেলেদের দিয়ে (যার নিজেরই কোনো কর্ম-অভিজ্ঞতা/কর্পোরেট সংশ্লিষ্টতা নেই) বাছাই প্রক্রিয়ার পুরো কাজটা করিয়ে নিচ্ছেন; নিজে একটিবারও রিভিউ না করেই জুনিয়র কর্তৃক বাছাইকৃত সিভিগুলো নিজের নামে কোম্পানিতে পাঠিয়ে দেন। তাঁদের লক্ষ্য যতটা না সেবা (সঠিক লোক খোঁজা), তারচেয়ে বেশি ব্যবসা! একটু নাম ফুটে গেলেই যে কোনো চাহিদার বিপরীতে ইচ্ছেমতো সিভি পাঠিয়ে দায়িত্ব খালাস! মাঝেমধ্যে কানা-টক্করে দু’-একটা বেঁধেও যায় আর লাখ লাখ টাকা বিল চলে আসে! এভাবে চলতে থাকলে আঁতুড় ঘরে থাকা হেড হান্টিং ব্যবসাও যে অকালে ঝড়ে পড়বে- সে কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
তবে আমি অল্পতে হতাশ নই, আমি মনে করি- আমাদের দেশে হেড হান্টিং সেবা পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে যত সম্প্রসারিত হবে, তত বেশি যোগ্য লোক উপযুক্ত চাকরি খুঁজে পাবেন, আবার কোম্পানিগুলোও অতি দ্রুত সঠিক লোকের সন্ধান পাবেন। এজন্য হেড হান্টিং পেশায় যোগ্য মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই ফটকাবাজ হেড হান্টাররা এ অঙ্গন ছাড়তে বাধ্য হবে। কিন্তু যোগ্য মানুষরা এগিয়ে না এলে জায়গা তো আর ফাঁকা থাকবে না, সেক্ষেত্রে অযোগ্যরাই ইচ্ছেমতো দাপিয়ে বেড়াবে! #
মূল লেখা : রাজিব আহমেদ
No comments