কাজের আগে পরিকল্পনা: কেন এবং কীভাবে?
কাজের আগে পরিকল্পনা: কেন এবং কীভাবে?
আমরা একটা কথা প্রায়ই শুনে থাকি, “একটি ভাল পরিকল্পনা কাজের অর্ধেক”। আমাদের হাতে যখন প্রচুর কাজ থাকে এবং যখন প্রচণ্ড চাপে থাকি তখন আমরা একটি বিষয়ই চিন্তা করি আর তা হল কাজটি কিভাবে দ্রুত শেষ করা যায়। একটি সুন্দর পরিকল্পনার কথা আমাদের মাথায় আসে না কিংবা আমরা পরিকল্পনা করে সময় নষ্ট করতে চাই না। আশা করি সকলেই আমার সাথে একমত হবেন।
কিন্তু কাজটি সঠিক নয় কারণ একটি ভাল পরিকল্পনা মূলত কাজের অর্ধেক।আপনি যদি পরিকল্পনা করে না এগোন তাহলে আপনার সময় অপচয় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং যেহেতু Time is money সেহেতু আপনি সময় নয়, অর্থ অপচয় করছেন।
যারা পরিকল্পনা করাকে অতিরিক্ত সময়ের অপচয় মনে করে তারা মূলত সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে পারে না তাই তাদের সবসময় সময়ের অভাব থাকে। আর যারা পরিকল্পিত জীবনযাপন করে তাদের হাতে সর্বদা অতিরিক্ত সময় থাকে যা তাদের অবসরের আনন্দ এনে দেয়।মানুষ মূলত পরিকল্পনাকে কাজের অংশ মনে করে না। বেশির ভাগ মানুষ এটাকে অতিরিক্ত কাজ মনে করে। যখন আমাদের হাতে অতিরিক্ত সময় থাকে তখন আমরা হয়ত পরিকল্পনার ব্যাপারে সচেতন হই কিন্তু যদি কাজটি জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ হয় তখন পরিকল্পনার চেয়ে দ্রুত কাজের ফলাফল লাভের দিকে নজর থাকে বেশি। আর এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় সঠিক পরিকল্পনার অভাবে কাজে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয় এবং দীর্ঘসূত্রিতা বেড়ে যায়।
আমাদের মাঝে কেউ কেউ মনে করে থাকেন পরিকল্পনা টিম কিংবা বড় কোন প্রজেক্টের জন্য ব্যবহার হয়। কিন্তু এটি প্রতিনিয়ত ব্যক্তিগত জীবনে ব্যবহার হওয়া উচিত। আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি কাজ পরিকল্পনা মাফিক করতে হবে এমন নয়। তবে আমাদের সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে বিষয় গুলো পরিকল্পনা মাফিক করতে হবে তা আমরা জানি এবং তা করা উচিত।
কাজের ভুলগুলো লিখে রাখুন যাতে পরবর্তী পরিকল্পনার সময় ভুলগুলো পরিত্যাগ করা যায়।
জীবনে পরিকল্পনা কেন?
১। একটি ভাল পরিকল্পনা একটি মানচিত্রের মত। আমরা যদি দিক নির্দেশনা মেনে চলি তবে আমরা জানতে পারব আমরা কোথায় আছি ? আমরা কতটুকু পথ অতিক্রম করেছি এবং আমাদের জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য আর কতটুকু পথ পাড়ি দিতে হবে।
২। পরিকল্পনা আমাদের সময় এবং অর্থ সাশ্রয় করে। এটি মূলত আমাদের বর্জনীয় কাজকে কর্তন করে শুধু মাত্র প্রয়োজনীয় অংশটুকু আমাদের দৃষ্টিগোচর করাতে সক্ষম হয়। আমরা এর মাধ্যমে জানতে পারি আমাদের কোন কাজ রিপিটেশন হচ্ছে কি না। আমরা নিশ্চয় আমাদের দুজন কাস্টমারকে একই সময়ে মিটিং এর সময় দিবো না যদি না তাদের সাথে একই উদ্দেশ্য মিলিত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
৩। কোন কাজ করার আগে পরিকল্পনা করলে আমাদের মস্তিষ্কের চর্চা হয় এবং ভাল ভাল আইডিয়া জেনারেট হয়। পরিকল্পনার কারণে আমরা আমাদের কাজকে ভিন্ন মাত্রায় দেখার সুযোগ পাই।
৪। পরিকল্পনা আমাদেরকে দেখিয়ে দেয় কোন কাজটি করতে হবে? কিভাবে করতে হবে? এবং এতে কত সময় লাগবে? এছাড়া কাজ সম্পন্ন করতে কাকে সম্পৃক্ত করতে হবে তাও পরিকল্পনার মাধ্যমে জানা যায়।
আপনার জন্য পরিকল্পনার টিপস:
১. টু-ডু লিস্ট তৈরি করুন
২. নিজের সক্ষমতাকে জানুন
৩. একটি ভাল পরিকল্পনা করুন।
৪. আপনার পরিকল্পনাকে নিয়মিত পর্যালোচনা করুন।
৫. কাজের মধ্যভাগে কতটুকু করা হয়েছে আর কত বাকী আছে তা যাচাই করুন।
৬. নোট করুন। কাজের ভুলগুলো লিখে রাখুন যাতে পরবর্তী পরিকল্পনার সময় ভুলগুলো পরিত্যাগ করা যায়।
৭. সময় ব্যবস্থাপনার টিপস সমূহ মেনে চলুন।
৮. ঘুমানেরা আগে সারা দিনকে পর্যালোচনা করুন।
৯. নিজের ইনবক্সকে সর্বদা পরিছন্ন রাখুন।
১০. প্রতিদিন উদীয়মান একই ধরনের সমস্যা গুলো থেকে মুক্ত থাকুন।
১১. সম্ভব হলে কিছু কাজ আপনার টিমের অন্য কাউকে দিয়ে করান।
১২. কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করুন।
১৩. আপনার সময় এবং কাজকে উপভোগ করুন।
১৪. নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটান।
২. নিজের সক্ষমতাকে জানুন
৩. একটি ভাল পরিকল্পনা করুন।
৪. আপনার পরিকল্পনাকে নিয়মিত পর্যালোচনা করুন।
৫. কাজের মধ্যভাগে কতটুকু করা হয়েছে আর কত বাকী আছে তা যাচাই করুন।
৬. নোট করুন। কাজের ভুলগুলো লিখে রাখুন যাতে পরবর্তী পরিকল্পনার সময় ভুলগুলো পরিত্যাগ করা যায়।
৭. সময় ব্যবস্থাপনার টিপস সমূহ মেনে চলুন।
৮. ঘুমানেরা আগে সারা দিনকে পর্যালোচনা করুন।
৯. নিজের ইনবক্সকে সর্বদা পরিছন্ন রাখুন।
১০. প্রতিদিন উদীয়মান একই ধরনের সমস্যা গুলো থেকে মুক্ত থাকুন।
১১. সম্ভব হলে কিছু কাজ আপনার টিমের অন্য কাউকে দিয়ে করান।
১২. কাজের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করুন।
১৩. আপনার সময় এবং কাজকে উপভোগ করুন।
১৪. নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটান।
আমাদের বেশির ভাগই এখনো আমাদের দিনটি শুরু করি নোট খাতায় লিখে কিংবা চিন্তা করে। অর্থাৎ আমাদের মধ্যে বেশির ভাগ লোকই পরিকল্পনা করতে দক্ষ এবং এ বিষয়ে আমাদের রয়েছে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। সেই ছাত্র জীবন থেকে আমরা নানা রকম পরিকল্পনায় পারদর্শী। কোন পরিকল্পনা হয়ত সফল হয়েছে আবার কোন পরিকল্পনা হয়ত ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের এ দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যেকটি কাজের শুরুতে যদি পরিকল্পনা করে এগুনো যায় তা আমাদেরকে সাফল্য এনে দেবে এ কথা নিশ্চিন্তে বলা যায়।
No comments