যে ৫টি অভ্যাস তোমার কর্মদক্ষতা বাড়াবে!
যে ৫টি অভ্যাস তোমার কর্মদক্ষতা বাড়াবে!
স্টিভ জবসের মতো ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গীকে আমরা সবাই ভালোবাসি। ইহলোক ত্যাগ করেছেন অনেক দিন হয়েছে। কিন্তুপ্রাত্যহিক জীবনে তাঁকে স্মরণ করা হয়নি এমন একটি দিন কি কেটেছে? উত্তর – না। কেননা তার কাজের প্রভাব এতটাইসুদূরপ্রসারী যে, এর প্রভাব থাকবে আরও অনেক কাল। পৃথিবীতে এমন আরো অনেক বিখ্যাত নেতা, ব্যবসায়ী রয়েছে যারাতাঁদের নিজস্ব প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে হয়ে উঠেছেন পৃথিবীর বুকে সেরা।
অধিকাংশ মানুষ বাঁচে হয় শরীরে, না হয় তাদের সম্ভাবনাময় শৃঙ্খলিত বৃত্তে। কিন্তু জগৎ বিখ্যাত মানুষ গুলো তাদেরপ্রতিভাকে কাজে লাগাতে নিজেদের এবং অন্যদের মধ্যে সেরা খুঁজে বের করতে বিভিন্ন উপায় ব্যবহার করে গেছেন প্রতিনিয়ত।আজ তাই এমন দারুণ ৫টি উপায় বলবো যার মাধ্যমে আরেকটু বাড়ানো যায় আমাদের কর্মদক্ষতা।
আমরা নিজেরা নিজেদের যতোই উদারমনা মনে করি না কেন, প্রকৃতক্ষেত্রে অপরের সাফল্য মেনে নিতে আমাদের সবারই কষ্টহয়। ধরো আমাদের কোন একজন বন্ধু অনেক ভালো একটা ফলাফল করলো কিংবা অনেক ভালো একটা চাকরী পেলো। কিন্তুতাদের এই সাফল্য উদযাপন না করে উল্টো আমরা মনঃক্ষুণ্ণ হই এবং মনে মনে বলা শুরু করে দেই “ও কেন এই চাকরী পেলো, ও কেন ভালো ফলাফল করলো? আমি কেন পেলাম না?“১। বন্ধ করতে হবে অন্যদের সাথে নিজেকে তুলনা করা:
এই সমস্যাটা আমাদের অনেকের জীবনেই আছে। তাতে করে আমরা আরো বেশি ডিপ্রেসড হয়ে পড়ি। আর ডিপ্রেশন সবারআগে আঘাত করে আমাদের আত্মবিশ্বাসে, আশাবাদ কমিয়ে দেয় গোড়া থেকেই। তাই সবার আগে অন্যদের সাথে তুলনা বন্ধকরে নিজেকে নিয়ে ভাবা শুরু করতে হবে, শুরু করতে হবে নিজের কাজটিকে নিয়ে ভাবা।
২। যা নেই তা নিয়ে না ভেবে, যা আছে তা নিয়ে লেগে পড়:
“Turn your weakness into your success”.
একজন সফল ও অসফল ব্যক্তির মৌলিক পার্থক্য হল যদি তুমি কোনো অসফল ব্যক্তির কাছে যাও তাহলে দেখবে তার কাছেতার অসফলতার হাজারখানেক বাহানা তথা অজুহাতের লিস্ট তৈরি আছে। অপরদিকে কোনো সফল মানুষের কাছে হাজারটাঅসুবিধার কারণ থাকা সত্ত্বেও অন্তত একটি এমন কারণ থাকে কোনো কাজ করার, যার জন্য তিনি সমস্ত বাধা অতিক্রম করেসফল হন।
আজ আমারা যদি কোন কাজে ব্যর্থ হই কিংবা কোন দুর্ঘটনার শিকার হই আমরা আত্মসমর্পণ করি নিজের কাছে। দোষদিই বিধাতা কিংবা ভাগ্যের উপর। আর এই সময়ে আশেপাশের অনেকে সমবেদনা জানায় “হুম আমরা ও বুঝি এখানেতোমার কোন দোষ নেই, সব ভাগ্য বা নিয়তি“। সফল ব্যক্তিরা কখনো তাদের কী নেই তা নিয়ে মাথা ঘামায় নি বরংকাজ করে গেছে তাদের যা ছিলো। তারা অতীত নিয়ে মাথা ঘামায় নি, চেষ্টা করে গেছে তাদের বর্তমান নিয়ে।
৩। ব্যর্থতার গল্প হয়ে উঠতে পারে অনুপ্রেরণা:
“Don’t read success stories, you will only get a message. Read failure stories, you will get some ideas to get success”
– A.P.J Abdul Kalam
সফলতা সোনার হরিণ। এই সোনার হরিণের পেছনে ছুটছি আমরা প্রতিনিয়ত। সফলতার সংজ্ঞা এক এক জনের কাছে এক একরকম। তবে সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন, ব্যর্থতাই সফলতার পেছনের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন: নিক উডম্যান – প্রতিষ্ঠাতাঃ GoPro, বিল গেটস – সহ–প্রতিষ্ঠাতা, মাইক্রোসফট, স্টিভ জবস – সহ–প্রতিষ্ঠাতা: অ্যাপল, রিচার্ড ব্রানসন – প্রতিষ্ঠাতা: ভার্জিন গ্রুপ, জ্যাক মা- প্রতিষ্ঠাতা: আলিবাবা গ্রুপ।
অন্য গণ্ডির কাছাকাছি যাওয়া মানেই নিজের স্বকীয়তা বিসর্জন দেয়া নয়। যার বাক্স যত ছোট তার চিন্তা করার শক্তি ততটাইকম। নিজেকে কর্মদক্ষ করে তুলতে হলে নিজ গণ্ডির বাইরে গিয়ে কাজ করা এবং ভাবার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। নিজেরচারপাশে দেয়াল থাকলে থাকতে দাও কিন্তু সেই দেয়ালে জুড়ে যেন থাকে অনেক জানালা আর বড় বড় দরজা।
আজ এই সফল ব্যক্তিদের পেছনে রয়েছে অনেক ব্যর্থতার গল্প তবে তাঁরা সবাই তাঁদের ব্যর্থতা, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়েগেছেন তাদের লক্ষ্যে। সফলতা জাদুর কাঠি নয় যে, তুমি ছুঁয়ে দিলেই সব সমাধান হয়ে যাবে। তোমাকে নিরন্তর চেষ্টা করেইএগিয়ে যেতে হবে তোমার কাঙ্ক্ষিত পথে।
৪। খুঁজে বের করা নিজের ভালো লাগার কাজটি কে:
অন্য কারো ইচ্ছেমতো নয়, নিজের ভালো লাগার কাজটি করো। জীবনের একটা উদ্দেশ্য খুঁজে বের করো এবং বিশ্বাস করো যে, তুমি ব্যতিক্রম কিছু করতে সক্ষম।
“Stop chasing the money and start chasing the passion.”
– Tony Hsieh
তুমি যখন গভীর মনোযোগের সঙ্গে কোনো উদ্দেশ্যে কাজ করবে তখন সেটা অসাধারণ হয়েই তোমার হাতে ধরা দিবে। ভিক্টরফ্রেঙ্ক বলেছিলেন “সফলতা সুখের মতন, যার পিছনে দৌড়ে পাওয়া যায় না এবং এটি কেবল সম্ভবযখন অনিচ্ছাকৃতভাবে একজনের আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়“। যখন তুমি বুঝতে পারবে তোমার জীবনেরকাজ কী তখন তোমার জগৎ জীবন্ত হয়ে উঠবে।
তখন প্রতিদিন ভোরে অগাধ ক্ষমতা ও বিপুল উৎসাহ নিয়ে জেগে উঠবে। তখন তোমার সকল চিন্তা একটি কেন্দ্রে, একটিসুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীভূত হবে। আর তোমার তখন নষ্ট করার মত সময় থাকবে না। আর একবার যদি নিজের ভালোলাগার কাজটি পেয়ে যাও তাহলে সফলতাও আর বেশি দূরে নয়।
৫। নিজ গন্ডির বাইরে কাজ করা:
“Thinking outside of the box allows you to get rewards outside of your reach”.
গণ্ডির বাইরে যাবার প্রচণ্ড ইচ্ছে থাকলেও বেশিরভাগ মানুষের পক্ষেই ভাষা, পেশা কিংবা সীমান্তের গণ্ডির বাইরে যাওয়া সম্ভবহয় না। নিজে যে পেশায় থাকি দিন-রাত শুধু সেটার ভালো মন্দ ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারি না বা চাইও না। গণ্ডির বাইরেরকিছু দেখলে বা শুনলে আমাদের অনেকেরই প্রথম প্রতিক্রিয়াটা হয় নেতিবাচক। যা আমরা দেখে বা শুনে অভ্যস্ত নই সেখানেপ্রথম কাজ হলো বুঝতে চেষ্টা করা।
অন্য গণ্ডির কাছাকাছি যাওয়া মানেই নিজের স্বকীয়তা বিসর্জন দেয়া নয়। যার বাক্স যত ছোট তার চিন্তা করার শক্তি ততটাইকম। নিজেকে কর্মদক্ষ করে তুলতে হলে নিজ গণ্ডির বাইরে গিয়ে কাজ করা এবং ভাবার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। নিজেরচারপাশে দেয়াল থাকলে থাকতে দাও কিন্তু সেই দেয়ালে জুড়ে যেন থাকে অনেক জানালা আর বড় বড় দরজা।
তাহলে না হয় আজ থেকেই শুরু করা যাক এই সুন্দর অভ্যাসগুলো কে আয়ত্ত করে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া এবং নিজেকে কর্মদক্ষকরে সুখী সুন্দর জীবন নিশ্চিত করা।
No comments